কাফেরদের ইজতেমায় সংঘাতের শংকা
প্রকাশ্য কাফের কাদিয়ানিদের মহড়াকে ঘিরে সংঘাতের আশংকা
ছড়িয়ে পড়ছে। আগামী ২২, ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের পঞ্চগড়ে কাফের কাদিয়ানিরা
মহড়ার আয়োজন করেছে। এখানে দেশ
বিদেশের কাদিয়ানিরা জড়ো হয়ে মজমা করবেন। তারা তার নাম দিয়েছে ‘জাতীয় ইজতেমা’।
২০১৫ সালে বাংলাদেশে তাদের একশো বছর পূর্ণ হওয়ার পর তারা
প্রকাশ্যে আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারই অংশ হিসেবে এবারে তারা ইজতেমার দু:সাহস দেখাচ্ছে।
ইজতেমা সামনে রেখে অত্র এলাকায় কাদিয়ানিরা ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা
চালাচ্ছে। বিশেষত
কাদিয়ানি মহিলারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুসলিম নারীদের দাওয়াত দিচ্ছে এবং তাদের বিভিন্ন
ধরনের প্রলোভন দেখাচ্ছে। মুসলিম পরিবারগুলোকে বলা হচ্ছে, ইজতেমায় অংশ
নিলে তাদেরকে উন্নত মানের কম্বল দেওয়া হবে।
এছাড়াও স্থানীয় কাদিয়ানিদের জন্য বেশ কিছু অবকাঠামো তৈরি
করা হচ্ছে –যা শীর্ষ কাদিয়ানি নেতারা উদ্বোধন করবে।
অন্যদিকে এলাকায় কাদিয়ানি ইজতেমার প্রস্তুতি শুরু হওয়ায়
স্থানীয় মুসলিমরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা এই কথিত ইজতেমার প্রতিবাদে আগামী শুক্রবার বিক্ষোভ এবং
২১-২৫ ফেব্রুয়ারি একই এলাকার তেলীপাড়া ঈদগাহ মাঠে পাল্টা সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। এরফলে সংঘাতের আশংকা
সৃষ্টি হয়েছে।
কাফেরদের এই মহড়াকে প্রতিহত করার ডাক দিয়ে ওলামায়ে কেরামগণ
বলছেন ,মুসলমানদের ঈমান নিয়ে খেলা করার জন্য বাংলাদেশের তৌহিদী
জনতার ঈমান পরীক্ষা করার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে কাদিয়ানি কাফেররা।
অপরদিকে কাফেরদের ঐ মহড়া বন্ধের দাবিতে দেশের আলেম সমাজ
রুখে দাঁড়িয়েছেন। কাদিয়ানীদের
মজমার স্থান পঞ্চগড়ে লংমার্চের কর্মসুচী ঘোষণার হুমকী দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম
বাংলাদেশ। এজন্য তারা
সাংবাদিক সম্মেলন করে কাদিয়ানীদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিও জানিয়েছেন। তাদের দাবি না মানলে
পঞ্চগড়ে লংমার্চ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সংঘাত এড়াতে স্থানীয় পৌরসভার মেয়র আলহাজ তৌহিদুল ইসলাম
প্রশাসনকে জানিয়েছেন, পঞ্চগড়ে এর আগে রাজারবাগীরা একটা জমায়েত করার
চেষ্টা চালিয়েছিল। ওলামায়ে কেরাম
ও স্থানীয় মানুষ তাদের নিষেধ করেছিল। সেটা বন্ধ না হওয়ায় পরে সংর্ঘষ হয়েছে। আমার মতামত হলো, এ ধরনের সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য স্থানীয় ওলামায়ে কেরাম ও
মুসুল্লীদের দাবি অনুযায়ী সব ধরনের সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের
ইজতেমার অনুমতি না দেওয়া হোক।
‘আহমদিয়া মুসলিম জামাত’ তথা
কাদিয়ানীদের সরকারিভাবে সংখ্যালগু অমুসলিম ঘোষণা করাসহ তাদের ইজতেমা বন্ধের জোর
দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
কাদিয়ানীদের তথাকথিত ইজতেমা বন্ধ না হলে পঞ্চগড় অভিমুখে
লংমার্চ করা হবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
১৩ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন
আমিরে হেফাজত। সংবাদ
সম্মেলনে তিনটি দাবি জানানো হয়। এছাড়াও কাদিয়ানিদের বিস্তারিত পরিচয় দলিলসহ পেশ করা হয়।
হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন,মূলত: কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা মির্যা গোলাম আহমদ
কাদিয়ানী ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গুরুদাসপুর জেলার অন্তর্গত কাদিয়ান গ্রামে
জন্মগ্রহণ করেন। এ কারণে তাকে
কাদিয়ানী এবং অনুসারীদেরকে কাদিয়ানী সম্প্রদায় বলা হয়। তবে তারা নিজেদের “আহমদিয়া মুসলিম জামা’ত” নামে পরিচয় দিয়ে থাকে এবং “আহমদী” বলতে ভালোবাসে।
কাদিয়ানী সম্প্রদায় কাফের হওয়ার কারণসমূহ
কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের সাথে মুসলিম সমাজের বিরোধ হানাফী-শাফেয়ী
বা হানাফী-আহলে হাদীস অথবা সুন্নী-বেদআতীদের মতবিরোধের মত নয়, বরং তাদের সাথে মুসলমানদের বিরোধ এমন কিছু মৌলিক আকীদা নিয়ে, যা বিশ্বাস করা-না করার উপর মানুষের ঈমান থাকা-না থাকা
নির্ভর করে। কাদিয়ানীরা
ইসলামধর্মের অনেক মৌলিক আকীদা অস্বীকার করার কারণে নিঃসন্দেহে অমুসলিম ও কাফের। বরং যে ব্যক্তি (তাদের
কুফরী বিষয়গুলো জানার পরও) তাদের কাফের মনে করবে না বা এতে সন্দেহ পোষণ করবে, সেও নিঃসন্দেহে কাফের।
নিম্নে তাদের কাফের হওয়ার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হল:-
এক. আকীদায়ে ‘খতমে নবুওয়াত’ অস্বীকার বা মুহাম্মাদ (স:) কে শেষ নবী হিসেবে না মানা।
পবিত্র কুরআন পাকের ৯৯টি আয়াত ও ২১০টি হাদীস দ্বারা
প্রমাণিত এবং উম্মতের ঐক্যমত যে, আমাদের প্রিয় নবী
হযরত মুহাম্মাদ সর্বশেষ নবী এবং তাঁর পরে কিয়ামত পর্যন্ত আর কোনো নতুন নবীর
আবির্ভাব হবে না। এটি ইসলামের
অকাট্য মৌলিক আকীদা, যার অস্বীকারকারী নিঃসন্দেহে কাফের।
মুসলমানদের এমন একটি অকাট্য আকীদার বিপরীতে অবস্থান নিয়ে
মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী নিজেকে নবী ও রাসূল দাবি করেছে। (সূত্র: রূহানী খাযায়েন ১৮/২৩১ ও ২০৭; ২২/৫০৩; ২৩/৩২৮ ও ৩৩২)
সুতরাং মির্যা কাদিয়ানী মুসলমানদের সর্বসম্মত আকীদা মুতাবেক
কাফের। আর যারা তাকে
নবী বলে বিশ্বাস করে, তারা ইসলামের সর্বজনস্বীকৃত আকীদা মুতাবেক
মুসলমান থাকতে পারে না; তারাও নিঃসন্দেহে অমুসলিম ও কাফের।
দুই. ঈসা আলাইহিস সালামের জীবিত থাকা ও অবতরণ অস্বীকার
কেয়ামত সংঘটিত হওয়াটা যেমন সুনিশ্চিত, তদ্রুপ কেয়ামতের বড় আলামত হিসেবে হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের
আসমান থেকে অবতরণ করার বিষয়টিও নিঃসন্দেহে একটি ইসলামী আকীদা।
কুরআন মাজীদের ১৩টি আয়াত ও ১১৬টি হাদীস দ্বারা ঈসা আলাইহিস
সালামের জীবিত থাকা ও কেয়ামতের পূর্বে আসমান থেকে আখেরি নবীর উম্মত হিসেবে অবতরণ
করাটা প্রমাণিত এবং এ বিষয়ে সকলের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু মির্যা কাদিয়ানী বলেছে, “ঈসা মৃত্যু বরণ করেছেন; তিনি আর আসবেন
না এবং আমিই হলাম ঈসা।” (রূহানী খাযায়েন ২১/৪০৬; ১৯/১১৩)
“ঈসা আ. মৃত্যু বরণ করেননি- এমন বলা বড় ধরণের শিরিক।” (প্রাগুক্ত ২২/২৬০)
সুতরাং মির্যা কাদিয়ানী ও তার অনুসারীরা ইসলামের এ অকাট্য
আকীদা অস্বীকার করার কারণেও কাফের।
তিন. নবীগণের অবমাননা ও তাঁদের সম্পর্কে অপবাদ
মির্যা কাদিয়ানী কবিতা আবৃত্তি করেছে, “প্রত্যেক রাসূল আমার জামার ভিতরে লুকানো।” (রূহানী খাযায়েন ১৮/৪৭৮) সে আরো
লিখেছে,
“মুহাম্মাদ এর জন্য চন্দ্রগ্রহণ হয়েছে আর আমার
জন্য চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ উভয়টা হয়েছে।” (প্রাগুক্ত ১৮/১৯)
অন্যত্র লিখেছে, “ঈসা আ. মদ পান
করতেন।” আরো বলেছে, “তিনি অধিকাংশ সময় গালিগালাজে অভ্যস্ত ছিলেন এবং তাঁর মিথ্যা
বলার অভ্যাস ছিল।” (প্রাগুক্ত ১৯/৭১; ১১/২৮৯) “ইবনে মরিয়মের আলোচনা
ছাড়্,
গোলাম আহমদ তার চেয়ে উৎকৃষ্ট।”
(প্রাগুক্ত ১৮/২৪০)
মির্যাপুত্র বশির আহমদ এম. এ. বলেছে, “মির্যার আধ্যাত্মিকতা হুজুর -এর সময়ের আধ্যাত্মিকতা থেকে
বেশি শক্তিশালী ও দৃঢ়।” (নাউযুবিল্লাহ) (কালিমাতুল ফসল পৃ. ১৩১)
এ সম্পর্কে ইসলামের বিধান হল, নবীগণের অবমাননাকারী ও তাঁদের সম্পর্কে অপবাদকারী কাফের। এছাড়া তারা কাফের হওয়ার আরো অনেক কারণ রয়েছে।
বৃটিশ সরকারের বিশ্বস্ত এজেন্ট ও তাদের দাঁড়
করানো নবী
মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী লিখেন, “অতএব আমার ধর্ম- যা আমি বারবার প্রকাশ করছি যে, ইসলামের দুইটি অংশ। ১. আল্লাহর আনুগত্য। ২. এই (বৃটিশ) সরকারের আনুগত্য।”
(রূহানী খাযায়েন ৬/৩৮০)
“হে মহামতি ভারত সম্রাজ্ঞী!…আপনার পবিত্র আকাক্সক্ষার ফলশ্রুতিতেই আল্লাহ আমাকে প্রেরণ করেছেন।” (প্রাগুক্ত ১৫/১২০)
তিনি নিজের সম্পর্কে বৃটিশ সরকারের সাক্ষী তুলে ধরেন এভাবে-
“সে (মির্যা) পূর্ব থেকেই ইংরেজ সরকারের পূর্ণ হিতাকাঙ্খী ও
সেবক।” অতঃপর বলেন, (তাই) “নিজেদের এই রোপনকৃত
চারার ক্ষেত্রে অত্যন্ত ধীরতা, সতর্কতা ও অনুসন্ধান
করে সিদ্ধান্ত নিবেন।” (মাজমূআয়ে ইশতিহারাত ৩/২১)
“আমার জীবনের অধিকাংশ সময় এই ইংরেজ সরকারের সমর্থন ও
সহযোগিতায় কাটিয়েছি। জিহাদের বিরোধিতা আর ইংরেজদের আনুগত্যের পক্ষে এত বই ও প্রচারপত্র লিখেছি যে, ৫০টি আলমারি ভরে যাবে।”
(রূহানী খাযায়েন ১৫/১৫৫)
আমি ইংরেজ সরকারের সেবায় ৫০ হাজার বই-পুস্তক ও প্রচারপত্র
ছাপিয়ে বিতরণ করেছি।” (প্রাগুক্ত ১৫/১১৪) “এই (বৃটিশ) সরকারের অধীনে যে নিরাপত্তা
পাচ্ছি,
তা মক্কায় পাব না; মদীনায়ও না।” (প্রাগুক্ত ১৫/১৫৬)
“বৃটিশ সরকারের অবাধ্যতা ইসলাম, আল্লাহ ও রাসূলের অবাধ্যতার নামান্তর।”
(প্রাগুক্ত ৬/৩৮১) “আমি দাবি করে বলছি, সকল মুসলমানের
মধ্যে আমি ইংরেজ সরকারের প্রথম স্তরের হিতাকাঙ্খী।”
(প্রাগুক্ত ১৫/৪৯১)
“… বিশেষত আমার অনুসারীরা বৃটিশ সরকারের এমন নির্ভেজাল
হিতাকাঙ্খী, যার নযীর মুসলমানদের মাঝে নেই। এবং ওরা সরকারের এমন
ওফাদার সৈন্য, যাদের শরীর ও অন্তর বৃটিশ সরকারের
হিতাকাঙ্খীতায় পরিপূর্ণ।” (প্রাগুক্ত ১২/২৬৪)
বিভিন্ন দেশ, আদালত ও প্রতিষ্ঠানকর্তৃক অমুসলিম ঘোষণা
১. সিরিয়া ১৯৫৭ সালে, মিসর ১৯৫৮ সালে
এবং পাকিস্তানের ন্যাশনাল এসেম্বলী ১৯৭৪ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর কাদিয়ানীদের
সরকারীভাবে অমুসলিম ঘোষণা করেছে। এভাবে সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত, কাতারসহ বহু দেশ
তাদের কাফের ঘোষণা করেছে।
২. ১৯৭৪ সালের ৬-১০ এপ্রিল সৌদি সরকারের পরিচালিত ইসলামী
সংস্থা ‘রাবেতায়ে আলমে ইসলামি’র
তত্ত্বাবধানে মক্কা শরীফে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে ইসলামী বিশ্বের ১৪৪টি সংগঠনের
প্রতিনিধিগণের সর্বসম্মতিক্রমে কাদিয়ানীদের কাফের ও অমুসলিম ঘোষণা করা হয়।
৩. মুসলিম বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংগঠন ও.আই.সি ১৯৮৫ সালের
ডিসেম্বর মাসে কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম ঘোষণা করেছে।
৪. লাহোর হাইকোর্ট, সম্মিলিত শরয়ী
আদালত এবং পাকিস্তান সুপ্রিমকোর্ট বিভিন্ন সময়ে কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে অমুসলিম
ঘোষণা করে।
৫. স্বাধীন ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের অতিরিক্ত বিচারপতি
মাননীয় ‘শ্রী নামভাট যোশী’ ১৯৬৯ সালের ২৮৮
নম্বর মামলার রায়ে বলেন, “যে ব্যক্তি মির্যা গোলাম আহমদকে
মান্য করে তাকে কখনো মুসলমান বলা যায় না”।
যৌক্তিক বিচারে অমুসলিম ঘোষণা ও ইজতেমা বন্ধের দাবি
৯০ শতাংশ মুসলমানের এদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃস্টান সম্প্রদায়ের লোকেরা যেমন বাংলাদেশের নাগরিক, তেমনি কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের লোকেরাও এ দেশের নাগরিক। দেশের প্রচলিত আইন
অনুসারে অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা যতটুকু নাগরিক অধিকার ও ধর্মপালনের স্বাধীনতা
ভোগ করে থাকে, অমুসলিম কাদিয়ানী সম্প্রদায়ও ততটুকু নাগরিক
অধিকার ও ধর্মপালনের স্বাধীনতা নিয়ে সংখ্যালঘু হিসেবে বসবাস করুক- এতে আমাদের কোন
আপত্তি নেই।
তবে তা তাদের নিজস্ব ও স্বতন্ত্র ধর্মীয় পরিচয়ে হতে হবে, মুসলমান পরিচয়ে নয়। আর তাদের কুফরী মতবাদকে ইসলামের নামে চালিয়ে দেয়া এবং তাদের
ধর্মীয় রীতিনীতি পালনে একান্ত ইসলামী পরিভাষা যেমন কালিমা, নামায, রোযা, মসজিদ ও আযান-ইকামত ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে সাধারণ
মুসলমানদের ধোঁকা দেয়া ইসলামের দৃষ্টিকোণে সম্পূর্ণ বেআইনী ও জঘন্যতম অপরাধ।
সুতরাং কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি মুসলিম সম্প্রদায়ের
মৌলিক আকীদা রক্ষার আন্দোলন তো অবশ্যই, ধর্মীয়
অধিকারের বিষয়ও বটে।
তাছাড়া কাদিয়ানীরা অমুসলিমরূপে ঘোষিত ও চিহ্নিত না হলে তাতে
মুসলমানদের ধর্মীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রে বহুবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন:
১. তাদের রচিত ও প্রকাশিত বইপত্রকে মুসলমানদের লেখা বই-পুস্তকের
মত মনে করে সাধারণ মানুষ পাঠ করে বিভ্রান্ত হয় এবং নিজেদের ঈমান হারিয়ে বসে।
২. তাদের উপাসনালয়কে মসজিদ মনে করে সেখানে নামায আদায় করে
ধোঁকায় পড়ছে এবং অজান্তে তাদের ইবাদত বিফলে যাচ্ছে।
৩. কাদিয়ানী ধর্মমতের অনুসারী কোনো ব্যক্তি মুসলমানের ইমাম
সেজে তাদের ঈমান-আমল নষ্ট করতে পারে।
৪. তারা মুসলমান পরিচয়ে নিজেদের মতবাদ-মতাদর্শ প্রচার করলে
তাতে সাধারণ মুসলমান তাদের মুসলমানেরই একটি দল মনে করে তাদের মতবাদ গ্রহণ করে
নিজেদের সবচেয়ে বড় সম্পদ ঈমান হারানো আশংকা রয়েছে।
৫. তারা মুসলমান নামে পরিচিত হওয়ার কারণে অনেক মুসলমান
তাদের সাথে মুসলমানের মত আচার-আচরণ ও চলাফেরা করে। অথচ তাদের সাথে মুসলমানের সম্পর্ক হওয়া উচিত
এমনই,
যেমন কোনো অমুসলিমের সাথে হয়ে থাকে।
৬. অনেক সাধারণ মুসলমান কাদিয়ানীদের মুসলমান মনে করে
বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করার ফলে আজীবন ব্যভিচারের গুনাহে লিপ্ত থাকে।
৭. কাদিয়ানী ধর্মাবলম্বী গরীবকে যাকাত দিয়ে অনেক মুসলমানের
যাকাতের ফরয বিধান বিনষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান।
৮. যে কোনো কাফের তথা অমুসলিমের জন্য হারাম শরীফে প্রবেশ
নিষেধ। অথচ কাদিয়ানী
সম্প্রদায়ের লোকেরা মুসলিম পরিচয় দিয়ে হজ্ব ও চাকরির নামে সৌদি আরবে গিয়ে হারাম
শরীফে প্রবেশ করে তার পবিত্রতা নষ্ট করার সুযোগ পাচ্ছে।
অতএব সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট
আমাদের জোর দাবী হল
১. বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রের ন্যায় বাংলাদেশেও
অনতিবিলম্বে কথিত ‘আহমদিয়া মুসলিম জামাত’ তথা কাদিয়ানীদের সরকারীভাবে সংখ্যালগু অমুসলিম ঘোষণা করা
হোক।
২. তাদের জন্য ইসলামী পরিভাষাসমূহ যেমন: কালিমা, নামায, রোযা, হজ্ব ও মসজিদ ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ
করা হোক।
৩. আগামী ২২, ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি
২০১৯ খ্রি. তারিখে অনুষ্ঠিতব্য তথাকথিত ইজতেমা বন্ধ ঘোষণা করা হোক।
তাদের তথাকথিত ইজতেমার আয়োজন ও কার্যক্রম বন্ধ করা না হলে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ পঞ্চগড় অভিমূখে লংমার্চসহ আরো কঠিন
কর্মসূচি ঘোষণা দিতে বাধ্য হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন