বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

কাদিয়ানীদের লিফলেটে উল্লিখিত প্রশ্নগুলোর ধারাবাহিক জবাব [১]

Add caption
কাদিয়ানীদের লিফলেটে উল্লিখিত প্রশ্নগুলোর ধারাবাহিক জবাব [১]

____
প্রশ্ন :- কোনো দেশের সরকার তার নাগরিকদের ধর্ম নিরূপণ ও নির্ধারণ করার অধিকার রাখে কি? আল্লাহ ও রাসূল কি কাউকে এই ক্ষমতা দিয়েছেন?
_______
উত্তর :- ক. আহমদী তথা কাদিয়ানীরা নিজেদের কথারজালে নিজেরাই ফেঁসে যায়। এই তো কয়দিন আগের (২০/০৪/২০১৮ইং) ঘটনা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হেলিপ্যাড মাঠে 'খতমে নবুওত সম্মেলন' হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাদিয়ানিরা সম্মেলনটিকে প্রশাসন দিয়ে বন্ধ করে দেয়। তাই তাদের জিজ্ঞেস করতে চাই যে, আপনারা প্রশাসনকে খতমে নবুওত সম্মেলনের নির্ধারক কিবা নিয়ন্ত্রক মানেন? নতুবা প্রশাসন কিজন্য সম্মেলনে বাধা দিল?

_____
খ. মনে করুন আজ বাংলাদেশ সরকার আপনাদের (কাদিয়ানি) সাংবিধানিক আইন করে নিষিদ্ধ করে দিল। তখন আপনাদের কি অবস্থা হবে? হয়ত তখন চেঁচিয়ে বলবেন যে, "সরকার কি ধর্মের নির্ধারক কিবা নিরূপক"? আর তখনি সরকার যদি প্রতিউত্তরে বলে যে, নাসিরনগরের সম্মেলন যখন প্রশাসন দিয়ে বন্ধ করে দিলে তখন কি প্রশাসন খতমে নবুওত সম্মেলনের নির্ধারক কিবা নিরূপক ছিল? নতুবা এখন কেন এইরূপ চেঁচাচ্ছিস? তখন লজ্জায় মুখ লুকাবেন কোথায়?
কাদিয়ানিদের দৃষ্টিতে ঈমান আকিদার গুরুত্ব কতটুকু তা আমাদের জানা নেই। কিন্তু আমাদের নিকট জান মালের চেয়েও ঈমান-আকিদার মূল্য অনেক বেশি। তাই সরকারের নিকট আমরা আমাদের জান মালের ন্যায় নিজেদের ঈমান-আকিদার সুরক্ষার দাবীও জানাই। এটা আমাদের নাগরিক অধিকারও। তাই সরকার কাদিয়ানিদের দৃষ্টিতে যাইহোক না কেন, তাতে কোনো পরোয়া নেই।
গ. কাদিয়ানিদের উল্লিখিত আপত্তি কিছুক্ষণের জন্য মেনে নিয়ে জিজ্ঞেস করতে চাই যে, সরকার তার জনগণের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে তখন সরকারকে জনগণের জান মালের নিরূপক বা নির্ধারক বলা যাবে কি? অন্যথা বর্ণিত প্রশ্নমতে আল্লাহ ও রাসূল সরকারকে জনগণের জান মালের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষমতা কিভাবে দিলেন? জবাব দেবেন!
ঘ. মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী তার "তাযকিরা" নামক কিতাবের ৫১৯ নং পৃষ্ঠাতে তাকে অস্বীকারকারী দুনিয়ার সকল মুসলমানকে "অমুসলিম" আখ্যা দিয়ে গেছেন। এখন বলুন, সব অ-কাদিয়ানীকে অমুসলিম ঘোষণা দেয়ার এই ক্ষমতা আল্লাহ এবং রাসূল মির্যা কাদিয়ানীকে কিভাবে দিতে পারেন? মির্যা কাদিয়ানী কি আমাদের মুসলিম উম্মাহার ঈমান-আকিদার নির্ধারক? জবাব দেবেন!
ঙ. কোনো কাদিয়ানির সাধ্য নেই ইসলামের ইতিহাসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করার। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে সর্বশেষ নবী মুহাম্মদে আরাবী (সা:) ইন্তেকাল করার পর হযরত আবুবকর (রা:) প্রথম খলিফা মনোনীত হন। তাঁর শাসনামলে যাকাত অস্বীকারকারীসহ ইসলামের মোড়কে মুসাইলামা, তুলায়হা, সাজাহ সহ আরো বহু ভণ্ডনবীর আত্মপ্রকাশ ঘটে। তখন হযরত আবুবকর (রা:) ভন্ডনবীদের কঠোর হাতে দমন করেছিলেন।
ইতিহাস বলে, ভন্ডনবী মুসায়লামা ও তার দলবলকে নির্মূল করতে প্রথমে হযরত ইকরামা (রা:)-এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনীকে প্রেরণ করেছিলেন। কিন্তু ৪০ হাজার সৈন্যের বিশাল বাহিনীর নেতৃত্বদানকারী ভন্ডনবী মুসায়লামার সাথে তিনি পেরে উঠতে না পারায় পরবর্তীতে হযরত শোরাহবিল ইবনে হাসানা (রা:)-কে বাড়তি সৈন্যসহ প্রেরণ করেন। তাদের সহযোগী হিসেবে মহাবীর হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদ (রা:)ও সদলবলে ভন্ডনবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত হন। বিশাল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। সর্বশেষে ভন্ডনবী মুসায়লামা স্বীয় দলবলসহ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ভন্ডনবী ও তার অনুসারীদের সাথে ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবুবকর (রা:)-এর এইরূপ আচরণ মুসলিম দুনিয়ার জন্য আদর্শ নয় কি?
এখন কাদিয়ানিরা ইসলামের প্রথম খলিফার দিকে আঙ্গুল উঠিয়ে বলুক যে, হযরত আবুবকর (রা:)-কে জনগণের ঈমান আকিদার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কে ক্ষমতা দিল? আমরা দেখতে চাই তাদের এই দুঃসাহস আছে কিনা? সুতরাং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভন্ডনবী মির্যা গোলাম আহমদের "আহমদিয়া জামাত" পন্থী কাদিয়ানিদের সকল অভিযোগ অসার এবং পরিত্যাজ্য।
# অত:পর ২ নং প্রশ্নের জবাব।

লেখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী।

1 টি মন্তব্য:

ইসলামের দৃষ্টিতে বৃক্ষরোপণ ও সবুজ বনায়নের গুরুত্ব

ইসলামের দৃষ্টিতে বৃক্ষরোপণ ও সবুজ বনায়নের গুরুত্ব হাফেয মাওলানা মুফতি ওসমান আল-হুমাম উখিয়াভী সিনিয়র মুহাদ্দিস জামেয়া ইসলামিয়া বাইতুল ক...