বৃহস্পতিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৬

আল্লামা শাহ আহমদ শফী দা বাঃ এর সংখিপ্ত জীবন ও কর্ম

আল্লামা শাহ আহমদ শফী দা বাঃ, বাংলাদেশে সর্বাধিক আলোচিত নামসমূহের
ইসলা মবিদ্বেষী চক্রের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। ধর্মে বিশ্বাসী আপামর মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন, সাহসের বাতিঘর। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর। উপমহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইসলামী বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর মহাপরিচালক। বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের      
এই মহামনীষীর জন্ম ১৯৩০ সালে। বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানাধীন পাখিয়ারটিলা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত দ্বীনদার পরিবারে। দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসায় যখন তিনি ভর্তি হন তখন তাঁর বয়স মাত্র ১০ বছর। ওই বয়সেই কিছু দিনের ব্যবধানে তিনি তার মা-বাবাকে হারান। তিনি পরম আত্মত্যাগ ও খোদাপ্রদত্ত মেধা, সদাচার, লেখাপড়ায় একাগ্রতার মাধ্যমে একাধারে ১০ বছর এখানেই অতিবাহিত করেন। একই সঙ্গে যুগশ্রেষ্ঠ ওস্তাদগণের স্নেহ-ভালোবাসা এবং প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কৃতিত্বের সঙ্গে ধর্মীয় বিষয়াদিতে ব্যুত্পত্তি অর্জনে সক্ষম হন। এই নবী প্রেমিক সংগ্রামী বুজুর্গের বাল্য, প্রাথমিক ও উচ্চতর শিক্ষার স্তরটা ছিল খুবই অভিনব ও সমৃদ্ধ ঘটনায় ভরপুর। শিক্ষা অর্জনের অদম্য বাসনা নিয়ে ১৩৭১ হিজরি সনে ছুটে যান ইসলামী শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে। সেখানে তিনি চার বছর অবস্থান করে দাওরায়ে হাদিস, ফুনুনাতে আলীয়া, দাওরায়ে তাফসির কোর্সে অধ্যয়ন করেন। দেওবন্দে অধ্যয়নকালে তিনি যাঁদের সংস্পর্শে ধন্য হন, তাঁদের মধ্যে প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় শায়খুল আরব ওয়াল আজম, যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, জ্ঞান ও খোদাভীতির সুউচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার, আওলাদে রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, মুজাহিদে মিল্লাত আল্লামা সাইয়্যেদ হুসাইন আহমাদ মাদানীর (রহ.) নাম। ওই বয়সেই তিনি এই মহামনীষীর হাতে বায়আত গ্রহণ করে তিনি খুব কম সময়ের মধ্যে খেলাফতপ্রাপ্ত হন। ইলম, আমল ও আধ্যাত্মিকতায় ধন্য আল্লামা আহমদ শফী দা.বা. একাধারে চার বছর বিরামহীন অধ্যয়ন ও বিশ্ববিখ্যাত ওস্তাদগণের খেদমত ও তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণের মাধ্যমে হাদিস, তাফসির, ফিকাহশাস্ত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যুত্পত্তি অর্জন করে যুগের অন্যতম মুহাদ্দিস প্রজ্ঞাবান বুজুর্গ আল্লামা মাদানির ইল্মী ও আমলী প্রতিনিধি হয়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীতে শিক্ষক হিসেবে তিনি নিযুক্ত হন। খোদা প্রেমের এই মহান অভিযাত্রী তাঁর কর্ম জীবনের সূচনা করেন এখান থেকেই। তার অধ্যাপনার সুনাম এবং সুখ্যাতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। চাতকের মতো ছুটে আসতে শুরু করে তাঁর দরসে হাজার হাজার ছাত্র।
১৪০৭ হিজরিতে হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালকের গুরুদায়িত্ব তাঁর উপর অর্পিত হয়। বর্তমানে মহাপরিচালকের পাশাপাশি শায়খুল হাদিসের দায়িত্বও তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সুচারুভাবে আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, লন্ডন, মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা উপমহাদেশে ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর ইলম ও প্রজ্ঞার উত্স থেকে অনুপ্রেরণা লাভকারী ছাত্র, শিষ্য, মুরিদ ও অনুসারী। এদের সংখ্যা বর্তমানে সম্ভবত লাখ লাখ ।
মুসলিম উম্মাহর এই ত্যাগী, সংগ্রামী, শিক্ষানুরাগী বিপ্লবী সমাজ সংস্কারক আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী দা.বা. জীবনের শুরু থেকে শিরক, বিদআত ও যাবতীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে অবিরাম লড়াই করে যাচ্ছেন। তাঁর আবেগঘন, জ্বালাময়ী ও সারগর্ভ বক্তব্য শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রাখে গভীর রাতে দুনিয়াবাসী যখন থাকে গভীর নিদ্রায় বিভোর, ঠিক সেই মুহূর্তে আল্লাহপ্রেমিক এই মানুষটি নিদ্রা ত্যাগ করে দাঁড়িয়ে যান জায়নামাজে এবং একান্ত নির্জনে বসে আদায় করেন বিভিন্ন ধরনের অজিফা। কায়মনোবাক্যে দোয়া করেন দেশের জন্য, মুসলিম উম্মাহ্র জন্য। 
আল্লামা শাহ্ আহ্মদ শফী দেশের শীর্ষ আলেমে দ্বীন হিসেবে আগে থেকেই সুপরিচিত। সাম্প্রতিক সময়ে নাস্তিক ব্লগারচক্রের বিষাক্ত থাবা যখন ইসলামের ভিত্তিমূলে আঘাত হেনে উপর্যুপরি দ্বীনকে ক্ষত-বিক্ষত করছে, তখনই গর্জে ওঠেছেন প্
ইসলামী বিপ্লব প্রত্যাশীদের আবেগ,স্বপ্ন আর অক্লান্ত মেহনত নিয়ে খেলা করার দায় নেবে কারা?
লিখেছেন আল্লাম মুফতি ওসমান আল হুমাম 
মুহাদ্দিস জামেয়া ইসলামিয়া তৈয়েবিয়া চাটখিল নোয়াখালী বাংলাদেশ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ইসলামের দৃষ্টিতে বৃক্ষরোপণ ও সবুজ বনায়নের গুরুত্ব

ইসলামের দৃষ্টিতে বৃক্ষরোপণ ও সবুজ বনায়নের গুরুত্ব হাফেয মাওলানা মুফতি ওসমান আল-হুমাম উখিয়াভী সিনিয়র মুহাদ্দিস জামেয়া ইসলামিয়া বাইতুল ক...